উড়ানের নতুন দিগন্ত: ভারতে তৈরি হচ্ছে অত্যাধুনিক হানসা-৩ ট্রেনার বিমান

 

দেশের বিমান প্রশিক্ষণ ব্যবস্থায় এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হতে চলেছে। সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি হচ্ছে অত্যাধুনিক প্রশিক্ষণ বিমান হানসা-৩ এনজি (Hansa-3 NG)। কাউন্সিল অফ সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ (CSIR)-এর তত্ত্বাবধানে ন্যাশনাল এরোস্পেস ল্যাবরেটরিজ (NAL) এই যুগান্তকারী বিমানটি ডিজাইন ও ডেভেলপ করেছে। সম্প্রতি এই বিমানটি বাণিজ্যিক উৎপাদনের ছাড়পত্র পেয়েছে, যা ভারতের বিমান চলাচল শিল্পের জন্য এক বড় পদক্ষেপ।

www.khabar24ghanta.com.



এতদিন পর্যন্ত ভারতে বিমান প্রশিক্ষণের জন্য মূলত বিদেশি বিমানের উপর নির্ভর করতে হতো। হানসা-৩ এনজি সেই নির্ভরতা কমাতে সাহায্য করবে। এই দুই আসনের হালকা ওজনের বিমানটি বিশেষভাবে ডিজাইন করা হয়েছে ফ্লাইং ক্লাবগুলোর প্রশিক্ষণের চাহিদা মেটানোর জন্য। এর উন্নত বৈশিষ্ট্য এবং সাশ্রয়ী পরিচালনা ব্যয় এটিকে বাণিজ্যিক পাইলট লাইসেন্স (CPL) প্রশিক্ষণের জন্য আদর্শ করে তুলেছে।

হানসা-৩ এনজি-র কিছু উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য:

 ✶এটি একটি দুই আসনের, লো-উইং বিমান।

   ✶এতে রয়েছে রোট্যাক্স ডিজিটাল কন্ট্রোল ইঞ্জিন, যা এটিকে অধিক শক্তি যোগায়।

 ✶বিমানটির এয়ারফ্রেম হালকা ও টেকসই composite উপাদান দিয়ে তৈরি।

   ✶আধুনিক গ্লাস ককপিট ডিজিটাল ডিসপ্লে প্রদান করে, যা পাইলটদের জন্য তথ্য দেখা ও বোঝা সহজ করে তোলে।

    ✶প্যানোরামিক ভিউ সহ বাবল ক্যানোপি পাইলট এবং প্রশিক্ষক উভয়ের জন্যই দৃশ্যমানতা বাড়ায়।

 ✶বৈদ্যুতিকভাবে নিয়ন্ত্রিত ফ্ল্যাপস এর উড্ডয়নকে আরও মসৃণ করে তোলে।

 ✶এটিতে উন্নত ইলেকট্রনিক ফুয়েল ইনজেকশন সিস্টেম রয়েছে, যা বিভিন্ন উচ্চতায় ইঞ্জিনের কার্যকারিতা বজায় রাখে এবং জ্বালানি সাশ্রয় করে।

  ✶এই বিমানটি দিন ও রাতে উড়তে সক্ষম এবং একবার জ্বালানি ভরলে প্রায় ৭ ঘণ্টা পর্যন্ত আকাশে থাকতে পারে।

কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং এই বিমানের প্রযুক্তি হস্তান্তরের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করেছেন। Pioneer Clean Amps Pvt. Ltd. নামক একটি বেসরকারি সংস্থা এই বিমানটি তৈরি করবে। প্রাথমিকভাবে বেঙ্গালুরুতে এর উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে এবং আশা করা হচ্ছে, খুব শীঘ্রই বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হবে।

সরকারের এই উদ্যোগ শুধু বিমান প্রশিক্ষণকে সহজলভ্যই করবে না, পাশাপাশি বিমান নির্মাণ শিল্পে ভারতকে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে। "আত্মনির্ভর ভারত" গড়ার লক্ষ্যে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। হানসা-৩ এনজি নিঃসন্দেহে দেশের তরুণ প্রজন্মের পাইলটদের স্বপ্ন পূরণে সহায়ক হবে এবং ভারতের বিমান চলাচল শিল্পকে আরও শক্তিশালী করবে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন