কে এই নভোচারী যিনি "রাকেশ শর্মার"পর ভারতীয় হয়ে মহাকাশে পাড়ি দিতে চলেছেন ?
১৮ই এপ্রিল, কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং জানিয়েছেন যে মে মাসে আমাদের ক্যাপ্টেন শসুভানসুশুক্লা আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে যেতে চলেছেন। আর এটি ইসরো ও নাসার খুব ভালো সহযোগিতা। এর সাথে সাথে তিনি এও জানিয়েছেন যে, "গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুক্লার যাত্রা শুধু একটি উড়ানের চেয়েও বেশি কিছু – এটি একটি ইঙ্গিত যে ভারত মহাকাশ অনুসন্ধানের এক নতুন যুগে সাহসের সাথে পদক্ষেপ করছে।" আর এখন ভারত মহাকাশ ও প্রযুক্তিতে ২.৩২ বিলিয়ন ডলার সম্প্রসারণ করবে, যা ভারতের মহাকাশ প্রযুক্তিকে সমানভাবে সাহায্য করবে এবং ইসরো তার কাজ ভালোভাবে করতে পারবে। জিতেন্দ্র সিং আরও যোগ করেছেন যে, ইসরো জুনে জিএসএলভি-মার্ক ২ রকেটের মাধ্যমে নাসার সাথে যৌথভাবে তৈরি নিসার উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করবে। এবং জুলাই মাসে মহাকাশ সংস্থা ভারী-লিফট এলভিএম-৩ রকেট ব্যবহার করে মার্কিন-ভিত্তিক এএসটি স্পেসমোবাইল ইনকর্পোরেটেডের ব্লুবার্ড ব্লক-২ উপগ্রহগুলিকে কক্ষপথে স্থাপন করবে।
ক্যাপ্টেন শুভানশুশুক্লা (৩৯) রাশিয়া ও নাসার মহাকাশ সংস্থায় দীর্ঘ দিন প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। সেখানে তিনি যথেষ্ট সহায়তা পেয়েছেন, যা তিনি শিখেছেন। এবং এর ফলস্বরূপ তিনি এখন ভারতীয় হয়ে নাসার ক্রু মেম্বারে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। নাসা তাদের পরবর্তী মহাকাশ অভিযান অ্যাক্সিয়াম ৪ মিশনের সময়সূচী মে মাসে নির্ধারণ করেছে, যা নাসার কেনেডি স্পেস সেন্টার, ফ্লোরিডা থেকে উৎক্ষেপিত হবে। আর এই বাণিজ্যিক মিশনের নেতৃত্ব দেবেন নাসার প্রাক্তন নভোচারী পেগি হুইটসন এবং শুভানশুশুক্লা পাইলট থাকবেন। পেগি হুইটসন তাঁকে সহায়তা করবেন। এই মিশনে শুধু শুভানশু নন, তাঁর সঙ্গী হতে চলেছেন পোল্যান্ডের ক্রু স্লাওজ উজানস্কি-উইসনিউস্কি এবং হাঙ্গেরির টিবোর কাপু। শুভানশু প্রত্যাশা করা হচ্ছে যে তিনি আইএসএস (আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন)-এ ২ সপ্তাহ থাকবেন এবং সেখানে অনেক গবেষণা ও অনুসন্ধান করবেন। আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে ভারতের পক্ষ থেকে শুভানশুই প্রথম নভোচারী যিনি যেতে চলেছেন।
শুভানশু শুক্লা কে:
তাঁর যাত্রা শুরু হয়েছিল যখন তিনি ২০০৬ সালের জুনে ভারতীয় বিমান বাহিনীর ফাইটার উইং-এ কমিশন লাভ করেন। একজন combat leader এবং অভিজ্ঞ টেস্ট পাইলট হিসেবে, তাঁর বিভিন্ন বিমান, যেমন Su-30 MKI, MiG-21, MiG-29, Jaguar, Hawk, Dornier, এবং An-32 এ ২০০০ ঘণ্টারও বেশি উড়ানের অভিজ্ঞতা রয়েছে। ২০২৪ সালের মার্চ মাসে গ্রুপ ক্যাপ্টেন পদে তাঁর পদোন্নতি তাঁর ব্যতিক্রমী অবদানের প্রতিফলন ঘটায়।
২০১৯ সালে, শুক্লা ইসরো থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ আহ্বান পান। তিনি রাশিয়ার মস্কোতে স্টার সিটির ইউরি গ্যাগারিন কসমোনট ট্রেনিং সেন্টারে কঠোর প্রশিক্ষণ শুরু করেন – এক বছরব্যাপী প্রস্তুতি যা তাঁর ভাগ্য নির্ধারণ করবে।
২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শুক্লাকে ভারতের প্রথম মানব মহাকাশ উড়ান মিশন গগনযানের জন্য নিবিড় প্রশিক্ষণরত অভিজাত নভোচারীদের একজন হিসেবে ঘোষণা করেন।
আগস্ট ২০২৪ সালে, শুক্লাকে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (ISS)-এ আসন্ন ইন্দো-মার্কিন মিশনের 'প্রাইম' নভোচারী হিসেবে নির্বাচিত করা হয়।
ভারতের মহাকাশ উড়ান মিশন:
ভারত মহাকাশ ও প্রযুক্তিতে অনেক দূর এগিয়েছে এবং এখন ভারত ২০২৫ সালে গগনযান মিশন উৎক্ষেপণ করতে চলেছে, যা ভারতের প্রথম মহাকাশ উড়ান হতে চলেছে। এতে ৩ জন মহাকাশ ক্যাপ্টেন এবং উইং কমান্ডার শুভানশু শুক্লা রয়েছেন। এবং এটি নিয়ে এখনও অনেক কাজ চলছে, যেখানে সমালোচনামূলক পরীক্ষার জন্য পুনঃব্যবহারযোগ্য লঞ্চ ভেহিকেল ব্যবহার করা হচ্ছে।অন্য মিশনের মাধ্যমে এর স্যাটেলাইট পোর্টফোলিও সম্প্রসারিত করা হয়েছে। চন্দ্রযান ৩-এর সফল অবতরণের পর ইসরো এখন মহাকাশ অনুসন্ধানের দিকে অনেকখানি ঝুঁকেছে। ভারত রিপোর্টে জানিয়েছে যে ২০২৮ সালের মধ্যে তারা ২টি মহাকাশ উড়ান উৎক্ষেপণ করবে এবং “২০৩৫ সালে ভারতের প্রথম মহাকাশ স্টেশন উৎক্ষেপণ করা হবে,” ইসরোর পরিকল্পনা অনুযায়ী।